"পরমগুরু" অর্থাৎ "সদগুরু" র সাথে পরিচয়:-
ত্রিগুণাতীত
সমস্ত জগতের অধিষ্ঠাতা রূপে সেই পরমব্রহ্মকে নমন করি।
“গু” শব্দের অর্থই হলো অন্ধকার এবং “রু” শব্দের অর্থ হলো প্রকাশ। অজ্ঞান কে নষ্ট করে যিনি ব্রহ্মরূপ
প্রকাশ করেন তিনিই হলেন গুরু। “গু” কার হলো গুণাতীত, “রু” কার হলো রূপাতীত। গুন্ এবং রূপে মহান হওয়ার জন্যই তাঁকে গুরু বলা হয়।
“গু” শব্দ "মায়া" কে চিহ্নিত করে
এবং" রু " শব্দ চিহ্নিত করে মায়া থেকে মুক্তি দানকারী পরমব্রহ্ম। প্রকৃত গুরু বা সদগুরু তিনিই যিনি সকল সময় “নির্গুণ নিরাকার পরমব্রহ্ম” এর পরিচয় করিয়ে দেন। যেমন একটি প্রদীপ
অন্য প্রদীপ প্রজ্বলনে ব্যবহৃত হয়, তেমনি ভাবে গুরু শিষ্যের মধ্যে জ্ঞানের প্রদীপ
জ্বালিয়ে ব্রহ্মভাব প্রকট করিয়ে দেন। গুরুদেবের কৃপায় অন্তরাত্মা পরমানন্দ
প্রাপ্তি করে এবং সমতা এবং মুক্তির পথ প্রশস্ত হয়।
আমরা যে সদগুরুর কথা বলি তিনি ঈশ্বর ছাড়া আর কেউ নন। তিনিই ঔংকার, তিনিই জগৎগুরু, আবার তিনিই সদগুরু, তিনিই পরমগুরু। গুরু গীতায় ভগবান শিব এবং মাতা পার্বতীর কথোপকথন কালে মহাদেব বলেছেন.. হে দেবী, যিনি গুরু তিনিই শিব, যিনি শিব তিনিই গুরু, এই দুইয়ের মধ্যে কোন ভেদ নেই। আর যিনি এই দুইয়ের মধ্যে ভেদ করেন তিনি মহাপাপী হন। হে দেবী, আত্মার মধ্যে গুরু জ্ঞান ছাড়া আর অন্য কিছুই সত্য নয়। সেই জন্য বুদ্ধিমানদের আত্মজ্ঞান হওয়ার জন্য চেষ্টা করা উচিত। এই জগৎ হল অবিদ্যাত্মক মায়ারুপ। এবং এই শরীর তত্ত্ব অজ্ঞানতা থেকেই উৎপন্ন। এই তত্ত্ব বিশ্লেষণকারী জ্ঞান যাঁর কৃপায় প্রাপ্ত হয়, তিনিই আসল গুরু। তাই অজ্ঞানতার জড়তা নাশ কারী এবং অনেক জন্মের কর্মকে নাশকারী, জ্ঞান এবং বৈরাগ্য কে সিদ্ধ কারী গুরুদেবের চরণামৃত পান করা উচিত।
গুরুদেবের কীর্তন হলো অনন্ত স্বরূপ ভগবান শিব এর কীর্তন করার ই সমান। গুরুদেবের চিন্তন করা, মানেই ভগবান শিবের চিন্তন করা। সদ্গুরু ব্রহ্মানন্দ স্বরূপ, পরম সুখদাতা, তিনি শুধুই জ্ঞান স্বরূপ, দ্বন্দ্ব থেকে রহিত, তিনি আকাশের সমান সুক্ষ এবং সর্ব ব্যাপক। তিনি "তৎ ত্বম অসি" এই মহাবাক্যের লখ্যার্থী। তিনি নিত্য, মল রহিত, অচল, সব বুদ্ধির সাক্ষী, সব ভাবনার উপরে, এবং সত্ব, রজ, তম এই তিনগুণ রহিত। ভগবান শিব গুরু গীতায় বলেছেন হে দেবী, গুরুই শিব, গুরুই দেবতা, গুরুই বন্ধু, গুরুই আত্মা, গুরুই জীব। সত্য বলতে গুরু ছাড়া আর কিছু নেই। যিনি একা, কামনা রহিত,চিন্তা রোহিত, ঈর্ষা রহিত এবং বালকের মতো শুদ্ধ স্বভাবযুক্ত থাকেন তিনিই ব্রহ্ম জ্ঞানী। মন্ত্র যজ্ঞে সুখ নেই, এই পৃথিবীতে গুরুদেবের কৃপা পাত্র ছাড়া, কোথাও সুখ নেই। মোক্ষের আকাঙ্ক্ষার কারণে বা লক্ষ্যে গুরু করা খুব দরকার। কারণ গুরুদেবের দ্বারাই পরম মোক্ষ লাভ হয়।
গুরুদেবই স্বয়ং সত্বগুণী হয়ে বিষ্ণুরূপে জগৎ পালন করেন, রজোগুণী হয়ে ব্রহ্মা রূপে জগৎ সৃজন করেন এবং তম গুনি হয়ে শংকর রূপে জগতের সংহার করেন। হে দেবী, যদি কেউ শিবের পূজায় রত, অথবা বিষ্ণুর পূজায় রত, কিন্তু গুরু তত্ত্বকে জ্ঞান না জানলে, এসবই ব্যর্থ। গুরুদেবের দীক্ষার প্রভাবে সব কর্ম সফল হয়। গুরুদেবের সম্প্রাপ্তি রুপী পরম লাভ থেকে, অন্য সকল লাভ প্রাপ্তি হয়। যাঁর গুরু কৃপা নেই তিনি মূর্খ।
হে দেবী কল্পকাল পর্যন্ত এর কোটি কোটি জন্মের যজ্ঞ, ব্রত, তপস্যা এবং শাস্ত্র উক্ত ক্রিয়ার যে ফল, এসব গুরুদেবের প্রসন্ন মাত্র সফল হয়ে যায়। হে দেবী, যাঁর প্রতি গুরু কৃপা নেই তাঁর বিদ্যা, বল, ধন এবং ভাগ্য নিরর্থক। তাঁর অধঃপতন হয়। যাঁর ভেতরে গুরু ভক্তি থাকে, তাঁর মাতা ধন্য, পিতা ধন্য, বংশ ধন্য। তাঁর বংশে যিনি জন্ম নেবেন তিনিও ধন্য।
হে দেবী, শরীর, ইন্দ্রিয়, প্রাণ, ধন, স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, মাতা কুল, পিতা কুল, এসব গুরুদেব, এতে সংশয় নেই। গুরুই দেবতা,গুরুই ধর্ম, গুরু নিষ্ঠাই পরম তপস্যা, গুরুর থেকে আর কিছু নেই। যেমন সাগরের জল, দুধের মধ্যে দুধ, ঘিয়ের মধ্যে ঘি, আলাদা আলাদা পাত্রে রাখা, কিন্তু জিনিস একই। তেমনি জীবাত্মা এবং পরমাত্মা একই। এইজন্য জ্ঞানী সর্বদা পরমাত্মার সঙ্গে অভিন্ন মনে করে, দিনরাত আনন্দ বিভোর থাকেন। হে দেবী, তাই গুরু তুষ্ট হলেই শিষ্যের মুক্তি হয়ে যায়। গুরু কৃপায় সিদ্ধি লাভ হয়। জ্ঞানী সর্বদা সমত্বভাবে রমন করেন। এবং ব্রহ্মনিষ্ঠ মহাত্মা তিন লোকে সমানভাবে গতি লাভ করেন। গুরুর ভক্তিই শ্রেষ্ঠ তীর্থ, অন্য তীর্থ নিরর্থক, গুরুদেবের চরণ কমল সব তীর্থময়।
এখন পর্যন্ত গুরুর যেসব বর্ণনা হলো তা সব পূর্ণগুরু অথবা সদগুরু নিয়ে বলা হয়েছে। এছাড়াও সমাজে আরও কিছু ধরনের গুরু আছেন তাঁরা গুরু হলেও পূর্ণ জ্ঞান দেন না,অথবা পূর্ণ গুরু নন, সদগুরু নন।
যেমন:-
সূচক গুরু:- যিনি শাস্ত্রের জ্ঞানদাতা তিনি হলেন সুচক গুরু।
বাচক গুরু:-যিনি ধর্ম, অধর্ম বিধানদাতা বর্ণ ও আশ্রম অনুসারে বিদ্যা প্রবচন দাতা, এরকম গুরুকে বলা হয় বাচক গুরু।
বোধক গুরু:- পঞ্চাক্ষরী মন্ত্র, আদির উপদেশ দাতা গুরুকে বোধক গুরু বলা হয়। মহাদেব বলেন, হে পার্বতী,আগের দুই প্রকার গুরু, সূচকগুরু এবং বাচক গুরুর তুলনায়, বোধক গুরু উত্তম।
নিষিদ্ধ গুরু :- মোহন, মারণ, বশীকরণ আদি তুচ্ছ মন্ত্র নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, অথবা পরামর্শ দেন, এরা হলেন নিষিদ্ধ গুরু। নিষিদ্ধ গুরু কে সর্বদা ত্যাগ করা উচিত।
বিহিত গুরু:- সংসার অনিত্য এবং দুঃখের কারণ এইরকম ভেবে বৈরাগ্য মার্গ দর্শনকারী গুরুকে বিহিত গুরু বলা হয়।
কারনাখ্য গুরু:- "তৎ ত্বম অসি" ইত্যাদি মহাবাক্যের উপদেশদাতা, সংসার রূপী, রোগের নিবারণকারী, গুরু কে কারণাখ্য গুরু বলা হয়।
সৎ গুরু:- সকল প্রকার সন্দেহ কে জড় থেকে নাশ করতে সক্ষম, জন্ম মৃত্যু ভয় বিনাশকারী, পরম গুরুকে সৎ গুরু বলা হয়। এই সদ্গুরুই হলেন আসল গুরু। অনেক জন্মের কৃত পূণ্য কর্ম থেকে এমন মহাগুরু বা সদগুরু প্রাপ্ত হন। তাঁকে প্রাপ্ত করলে শিষ্য পুনঃ পুনঃ সংসার বন্ধনে আর আবদ্ধ হন না। তিনি মুক্ত হয়ে যান।
হে দেবী সংসারে অনেক গুরু আছেন। এঁদের মধ্যে পরমগুরুকেই গ্রহণ করার চেষ্টা করা দরকার। যিনি অখণ্ড, এক রস, নিত্য মুক্ত এবং নিরাময় ব্রহ্ম নিজের মধ্যে দেখান, তিনিই গুরু হওয়ার যোগ্য।
সদগুরু বলেন পরমাত্মা অবিনাশী, অজন্মা, তাঁর কোনো আদি নেই, অন্ত নেই, তিনি নির্বিকার, চিদানন্দ স্বরূপ, তিনি সূক্ষ্মের সূক্ষ্মাতীত, মহানের মহান, তিনি অদ্বিতীয়, নিত্য জ্যোতিস্বরূপ, অচল, আনন্দস্বরূপ, অবিনাশী, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
প্রকৃত
গুরুদেব জ্ঞান, বৈরাগ্য, ঐশর্য্য, লক্ষ্মী, এবং মধুবাণী এই ছয় গুন্ সম্পন্ন হন। পরম গুরু শান্ত, কামনারাহীত, চিন্তারহিত, ঈর্ষারাহিত, সরল হন। তিনি ব্রহ্মজ্ঞানী হন। যে
ব্যক্তি পৃথিবীতে সর্বময়,
আনন্দময় এবং শান্ত হয়ে সর্বদা বিচরণ করেন তিনিই
সর্বজ্ঞ। এমন ব্যক্তি যেখানেই থাকেন তাহাই পুণ্যতীর্থ। জ্ঞানহীন মিথ্যাবাদী
এবং ভন্ড প্রকাশি গুরুকে ত্যাগ করা উচিত। ভেদবুদ্ধি উৎপন্নকারী, স্ত্রীলম্পট,
দুরাচারী, বিস্বাসঘাতী, থাকে ক্ষমাহীন, নিন্দনীয়, কামী, ক্রোধী, হিংসুক, অজ্ঞানী এবং মহাপাপী ব্যক্তিকে গুরু স্বীকার করা উচিত নয়।
শিষ্যের
ধন হরণ কারী গুরু প্রকৃত গুরু নয়, শিষ্যের
মনের দুঃখ হরণকারী গুরুই প্রকৃত গুরু। তিনি চতুর, বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন, এবং অধ্যাত্মজ্ঞানে জ্ঞানী। প্রকৃত গুরু
নির্মল, শান্ত, সাধুস্বভাবের এবং স্বল্পভাষী, কামক্রোধ থেকে মুক্ত, সদাচারী, এবং জিতেন্দ্রিয় হন। পরমগুরু হলেন তিনি যার কাছে সব সন্দেহ
এবং সব জিজ্ঞাসার সমাধান হয়। যাঁর কাছে জন্ম, মৃত্যু এবং ভয় থেকে মুক্তিলাভ হয় তাকেই
পরম গুরু বলা হয়, তাঁকেই সদগুরু বলা হয়। এমন গুরুর সান্নিধ্য প্রাপ্তি ব্যক্তিকে সংসার
বন্ধন থেকে মোক্ষ লাভ দান করে। যে গুরু অখণ্ড, একরস, এবং নিরাময় ব্রহ্মকে নিজের মধ্যে প্রকট করাতে পারেন তিনিই পরমগুরু হওয়ার যোগ্য। যেমন সব জলাশয়ের মধ্যে সাগর
শ্রেষ্ঠ, তেমনি সব গুরুর মধ্যে পরমগুরু শ্রেষ্ঠ।
মোহ
রহিত শান্ত নিত্যতৃপ্ত, সাশ্রয়ী, নিশ্চল, সুখী, অখণ্ড এক রস এবং আনন্দে তৃপ্ত ব্যক্তিই
পরমগুরু। অজ্ঞানরূপী অন্ধকার থেকে মুক্তিদিয়ে পরম জ্ঞান দানকারী গুরুই পরম গুরু।
সৎ গুরুদেবের বন্দনা:-
अखण्डमण्डलाकारं व्याप्तं येन चराचरम् । तत्पदं दर्शितं येन तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 1 ॥
যাঁর দ্বারা অখন্ড মন্ডলাকার এই চরাচর বিশ্ব পরিব্যাপ্ত রয়েছে, তাঁর(সেই ঈশ্বরের) শ্রীপাদপদ্ম যিনি দর্শন করিয়ে দেন, সেই শ্রীগুরুদেবকে পুনঃ পুনঃ প্রণাম জানাই।
अज्ञानतिमिरान्धस्य ज्ञानाञ्जन शलाकया । चक्षुरुन्मीलितं येन तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 2 ॥
অজ্ঞতার গভীরতম অন্ধকারে আমার জন্ম হয়েছিল এবং যিনি জ্ঞানের আলোকবর্তিকা দিয়ে আমার চক্ষু উন্মীলিত করেছেন। সেই গুরুকে আমি প্রণাম জানাই।
गुरुर्ब्रह्मा गुरुर्विष्णुः गुरुर्देवो महेश्वरः । गुरुः साक्षात् परम्ब्रह्म तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 3 ॥
গুরু ই ব্রহ্মা, গুরু ই বিষ্ণু, গুরু ই হলেন দেবাদিদেব মহেশ্বর, গুরুই হলেন সাক্ষাৎ পরমব্রহ্ম। সেই গুরুকে প্রণাম জানাই।
स्थावरं जङ्गमं व्याप्तं यत्किञ्चित्सचराचरम् । तत्पदं दर्शितं येन तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 4 ॥
যিনি সকল স্থায়ী এবং অস্থায়ী তথা চর এবং অচর যা কিছুই ব্যাপ্ত আছে, সকলের মধ্যে বিদ্যমান এবং যাঁর দ্বারা ওই চরণের(ঈশ্বরের সাক্ষাৎকার)দৃষ্ট হয়, সেই গুরুকে প্রণাম জানাই।
चिन्मयं व्यापियत्सर्वं त्रैलोक्यं सचराचरम् । तत्पदं दर्शितं येन तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 5 ॥
চেতনার ওই স্বরূপ যিনি তিন লোকে সব চর অচর জীবের মধ্যে ব্যাপ্ত, এবং যাঁর দ্বারা ওই চরণের(ঈশ্বরের সাক্ষাৎকার)দৃষ্ট হয়, সেই গুরুকে প্রণাম জানাই।
चैतन्यं शाश्वतं शान्तं व्योमातीतं निरंजनं। नादबिंदु कलातीतं तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 6॥
যিনি শুদ্ধ, যিনি শাশ্বত চেতনা, জিনিস স্বচ্ছ এবং আকাশের থেকেও বিশাল, যিনি বিন্দু, যিনি নাদ(দিব্য ধ্বনি) এবং যিনি কলা(মায়ার লীলা), এর উপরে সেই গুরুকে নমস্কার।
ज्ञानशक्तिसमारूढः तत्त्वमालाविभूषितः । भुक्ति मुक्ति प्रदाता च तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 7 ॥
যাঁর কাছে ' জ্ঞান 'এবং ' শক্তি 'দুটোই সামঞ্জস্য রূপে আছে, যিনি তত্বরুপী মালা দ্বারা বিভূষিত, যিনি সাংসারিক সুখ এবং মুক্তি(মোক্ষ), দুইয়েরই দাতা, সেই গুরুকে নমস্কার।
अनेकजन्म सम्प्राप्त कर्मबन्धविदाहिने । आत्मज्ञानप्रदानेन तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 8 ॥
আত্ম জ্ঞান রুপী অগ্নি দিয়ে যিনি অনেক জন্মের কর্ম বন্ধন কে নাশ করে দেন, সেই গুরুকে প্রণাম করি।
शोषणं भवसिन्धोश्च ज्ञापनं सार सम्पदः । गुरोः पादोदकं सम्यक् तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 9 ॥
যিনি সংসার রুপি সমুদ্র কে শুষ্ক করে আমাদের আসল সম্পদ প্রদান করেন, যাঁর পায়ের জল সম রূপে ভক্তের মন থেকে সংসারের ছাপ মিটিয়ে আসল সম্পদ(আধ্যাত্মিক জ্ঞান) প্রদান করেন, সেই গুরুকে নমস্কার করি।
न गुरोरधिकं तत्त्वं न गुरोरधिकं तपः । न गुरोरधिकं ज्ञानं तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 10 ॥
গুরু ছাড়া অন্য কোন আর তত্ত্ব নেই। গুরুর থেকে বড় কোন তপস্যা নেই। । গুরুর থেকে বড় অন্য কোনো জ্ঞান প্রদাতা নেই। সেই গুরুকে আমি নমস্কার করি।
मन्नाथः श्रीजगन्नाथः मद्गुरुः श्रीजगद्गुरुः । मदात्मा सर्वभूतात्मा तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 11॥
আমার যিনি নাথ, তিনি জগতেরও নাথ। আমার যিনি গুরু, তিনি পুরো ব্রহ্মাণ্ডের গুরু। আমার যে চেতনা আছে, সেটাই জগতের চেতনা, আলাদা নয়। সেই গুরুকে আমি নমস্কার করি।
गुरुरादिरनादिश्च गुरुः परमदैवतम् । गुरोः परतरं नास्ति तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 12 ॥
এমন কোন সত্য নেই যা গুরুর থেকেও আগে সৃষ্টি হয়েছে। গুরুই হলেন পরম দেবতা। এই অখিল ব্রহ্মাণ্ডে গুরুদেবের তুল্য আর কেউ নেই। সেই গুরুকে আমি প্রণাম করি।
यत्सत्येन जगत्सर्वं यत्प्रकाशेन भ्रान्तियत। यदानन्देन नंदैन्ति तस्मै श्रीगुरवे नमः ॥ 13 ॥
যে সত্যের উপর সমগ্র জগত অধিষ্ঠিত। যাঁর প্রকাশে পুরো সংসার প্রকাশিত। যার আনন্দে পুরো সংসার আনন্দিত। সেই গুরুকে নমস্কার করি।
नित्यशुद्धं निराभासं निराकारं निरंजनं। नित्यबोधं चिदानन्दम गुरुर्ब्रह्मानमाम्यहम ॥ 14 ॥
যিনি নিত্য শুদ্ধ, যিনি আভাস রহিত, যিনি নিরাকার, যিনি সব ইন্দ্রিয়ের থেকেও উপরে, যিনি নিত্য জ্ঞান স্বরূপ, যিনি চিদানন্দময়। এরকম ব্রহ্মস্বরূপ শ্রীগুরুদেবকে আমি প্রণাম করি।
ध्यानमूलं गुरोमूर्ति पूजा मूलं गुरोरपदं। मंत्र मूलं गुरोर्वाक्यं मोक्षमूलं गुरोर्कृपा ॥ 15 ॥
গুরু মূর্তির ধ্যানই হলো সব ধ্যানের মূল। গুরুর চরণ কমল এর পূজাই হল সব পূজোর মূল। গুরুবাক্যই হলো সব মন্ত্রের মূল এবং গুরুর কৃপাই হল মুক্তিপ্রাপ্ত হওয়ার প্রধান সাধন।
ত্বমেব মাতা চ পিতা ত্বমেব
ত্বমেব বন্ধুশ্চ সখা ত্বমেব
ত্বমেব বিদ্যা দ্রবিণং ত্বমেব
ত্বমেব সর্ব্বং মম দেবদেব।।
হে গুরুদেব, তুমিই আমার মাতা, তুমিই আমার পিতা, তুমিই আমার বন্ধু, তুমিই আমার সখা। তুমিই আমার বিদ্যাবুদ্ধি, তুমিই আমার ধনৈশ্বর্য্য সবই। হে আমার প্রাণদেবতা , তুমিই আমার জীবনের যথাসর্বস্ব।।
"গুরুগীতা" থেকে সংগৃহিত "গুরুতত্ব" সংক্ষিপ্ত সার।
আরো পড়ুন:-শ্রীমদ্ভাগবত গীতা সার , আত্মজ্ঞান কি ? , জীবনের আশ্চর্জজনক রহস্য ,
আপনার অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা কে জাগান , সৌভাগ্যবান অথবা দুর্ভাগ্যবান তা জানুন ,
পাঁচটি কাল্পনিক ভয় , সফলতা পাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ,
চিন্তন করুন এবং সফল হন , কেন করবেন ? সেটা জেনে তবেই কাজটি করুন ,
জীবনে কম্পাউন্ড ইফেক্ট এর প্রভাব , ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে বড় লক্ষ্য প্রাপ্তি
, আত্মবিশ্বাস কি করে বাড়াবেন , মহান ব্যক্তিদের সাতটি অভ্যাস , How to "IKIGAI"? ,
"KARMA" A YOGI'S GUIDE to craft your destiny ,
বাধা পেরিয়েই সফলতা , কেন করবেন এটা জেনে তবেই শুরু করুন ,
জীবনের আশ্চর্জজনক রহস্য , অহংকার হলো চরম শত্রু , সফলতার ১০ টি সূত্র ,
সেই একটি উদ্দেশ্য যা আপনার জীবন সফল করে দেবে , ১০ গুন্ সফল হবেন কিভাবে ? ,
সফল না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা ছাড়বেন না , ডোনাল্ড ট্রাম্প এর সফলতার ১৫ টি সূত্র ,
Ratan Tata, Mukesh Ambani, Azim Premji, Gandhiji, Mandella, Kalam's Quotes
Motivational And Inspirational Quotes For Success
Dan Lok's Advice For Success , 14 Risks you must take for Success
For English Motivational Articles ..visit....www.badisafalta.com

0 Comments