জীবনে ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে কিভাবে বড় লক্ষ্য কে
প্রাপ্তি করা যায় :-
যদি আপনার বড় লক্ষ্য প্রাপ্তি করার ইচ্ছা থাকে তাহলে একেবারে বড় লক্ষ্য নয়, ছোট ছোট আচরণ কে বদলে বড় বড় পরিবর্তন আনতে হবে। এবং এর মাধ্যমেই বড় লক্ষ্য কে প্রাপ্তি করা যায়। আপনি যখন কোনো লক্ষ্য কে প্রাপ্তি করতে চান তখন আপনার ক্ষেত্রে কি ঘটে? ধরুন আপনি গিটার বাজানো শিখবেন। যখন আপনি একটি লক্ষ্য রাখছেন, তখন মনে মনে চিন্তা ভাবনা হয় যে আমার লক্ষ্যে আমি কি করে, কি ভাবে এগোব? আপনি মনে পরিকল্পনা করেন যে আজ আমি এই জায়গায় আছি এবং তিন মাস পর ওই জায়গা পৌছাতে হবে। বেশির ভাগ লোক সরলভাবে বৃদ্ধি কে আশা করেন।
কিন্তু বাস্তবে সেটা হয় না। আপনি গিটার বাজাতে যখন প্রথম শুরু করবেন তখন মনে হবে আপনি এবিষয়ে কিছুই জানেন না। এবং তার জন্য জ্ঞান জোগাড় করতে হয়ত সময় নেবে। শিক্ষক খুঁজতে হয়ত সময় নেবে। তারপর যখন শেখা শুরু হয়ে যাবে তখন দেখবেন শুরুতে আপনার উন্নতির হার খুব কম থাকবে। আপনার উন্নতির গ্রাফ নিচের ছবির মতো হয় এবং আপনি দেখে হতাশ হন যে এতো পরিশ্রম করেও ফল দেখা যাচ্ছে না।
এই সময়টিকে বলা হয় টি ভ্যালি Valley of Disappointment অর্থাৎ হতাশা কাল। বেশির ভাগ লোকই এই Valley of Disappointment এর কালে মনের জেদ হারিয়ে চেষ্টা করতে ছেড়ে দেন। কিন্তু যদি আপনি জিদ করে লেগে থাকেন এবং প্রচেষ্টা চালিয়ে যান তাহলে দেখা যাবে ধীর গতিতে বৃদ্ধি চলতে চলতে হাঠৎ আপনার বৃদ্ধির হার বেড়ে যাবে। তাই নিজের উদ্দেশ্যে লেগে থাকুন। Valley of Disappointment এ এসে নিজের হাল ছেড়ে দেবেন না। বেশির ভাগ লোক এটা করতে পারেন না কারণ তাঁরা ভুল জিনিসের উপর মনোনিবেশ করেন। যদি আপনার ধ্যান বড় লক্ষ্যের প্রতি থাকে তাহলে উন্নতির হার দেখে হয়ত আপনি হতাশ হতে পারেন তাই আপনার মনোনিবেশ থাকা দরকার ছোট ছোট ব্যবহারে। বড় লক্ষ্য টিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করতে হবে একটি একটি করে অংশ সম্পূর্ণ করতে হবে। আমরা যদি ছোট ছোট ব্যবহারে পরিকল্পনা মাফিক পরিবর্তন নিয়ে আসি তাহলে কিছু কাল পর তা বিশাল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। অ্যাটমিক হ্যাবিট হলো ছোট ছোট স্বভাব যা করতে বেশি সময় লাগে না, কিন্তু তা এতটাই ক্ষমতাশালী যে প্রতিদিন সেটা করতে থাকলে কিছুকালেই সেটা বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসবে। যেমন ছোট ছোট পরমাণু মিলে বড় অনু তৈরি হয় তেমনি আমাদের "অ্যাটমিক হ্যাবিট" দীর্ঘদিন পর অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
সাল 2003 এ তাই হয়েছিল।ব্রিটিশ সাইক্লিং টীম
একজন নতুন কোচ নিযুক্ত করেন যার নাম ছিল Dave Brailsford । ব্রিটিশ সাইক্লিং টীম এর পারফরমেন্স
আগে খুব খারাপ ছিল। ডেভ ব্রাইলসফোর্ড কোচ হওয়ার পর ফোকাস করেন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র
নিখুঁত উন্নতিতে। তাঁর বিশ্বাস ছিল যে সবগুলোদিকে যদি খুব সূক্ষ্মভাবে নজর দিয়ে
প্রত্যেকটি ছোট ছোট বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সেই বিষয়গুলিকে যদি উন্নত করা হয় তাহলে
ওভার অল পারফরমেন্স এ অনেক বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে। তিনি বাইক সিট এডজাস্ট করেন যাতে বসে সাইক্লিং করা
আরামদায়ক হয়। তিনি সার্জেন থেকে শেখেন কিভাবে হাত ধুতে হয়, যাতে খেলোয়াড় রা বেশি অসুস্থ না হন।
তিনি অনেক রকম ম্যাসেজ জেল প্রয়োগ করে দেখেন কোন টি খেলোয়াড়দের ক্লান্তি থেকে মাসল
রিকভারি খুব তাড়াতাড়ি হয়। এই সব বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিসে যত্নসহকারে
পরিবর্তন করে দেখা গেলো বেজিং অলিম্পিক এ ব্রিটিশ সাইক্লিং টীম 60% মেডাল যেতে, এবং চার বছর পর লন্ডন অলিম্পিক এ 9 টি অলিম্পিক রেকর্ড এবং 7 টি ওয়ার্ল্ড রেকর্ড তৈরি করে। 2007 থেকে 2017 পর্যন্ত ব্রিটিশ সাইক্লিং টিমঃ 178 টি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ, 66 টি অলিম্পিক এবং প্যারা অলিম্পিক গোল্ড মেডাল যেতেন। একে বলা হয় “গ্রেটেস্ট টার্ন অ্যারাউন্ড ইন
সাইক্লিং হিস্টোরি।“
কেমন
ভাবে এই সফলতা এলো? 4-5 বছর 1% হরে উন্নতি করতে করতে। ভাবুন এভাবে
যদি নিজের জীবনে 1% করে উন্নতি করতে থাকেন তাহলে 4-5 বছরে আপনি কোথায় পৌছাবেন?
আমাদের
চরিত্র পরিবর্তনের জন্য তিনটি স্তর থাকে। 1)Change in Outcome 2)Change in Process
3)Change in
Identity
CHANGE IN
OUTCOME :-বেশির
ভাগ লোক যখন নিজের আচরণ বদল করতে চান তখন দেখা যায় তাঁরা বাহিরের পরিবর্তন কে বেশি
গুরুত্ব দেন। আমাকে বেশি টাকা রোজগার করতে হবে বা আমাকে বেশি ওজন কমাতে হবে। এসব হলো CHANGE IN
OUTCOME
CHANGE IN PROCESS:-যখন আপনি আপনার জীবন পদ্ধতি তে পরিবর্তন
আনবেন। উদাহরণ যদি আপনি জিম এ যোগদান করলেন
বা কোচিং ক্লাস এ যুক্ত হলেন তাহলে সেটা হলো চেঞ্জ ইন প্রসেস।
CHANGE IN
IDENTITY :- সবথেকে কার্যকরী পদ্ধতি হলো CHANGE IN IDENTITY । আপনি নিজের সম্বন্ধে যা চান তা যদি
পরিবর্তন করে নেন, তাহলে অভ্যাস আপনা আপনি পরিবর্তন হবে।
যদি আপনার পরিচয় হলো যে আপনি ধূমপান করেন, এবং আপনি যদি ধূমপান এর অভ্যাস ছাড়তে
চান তাহলে আপনাকে প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি দরকার। এবং ভবিষ্যতে যদি সামলে নিতে না পারেন
তাহলে সেই অভ্যাস আবার পুনরায় ফিরে আসতে পারে। কিন্তু যদি আপনি আপনার পরিচয় বানিয়ে নেন
যে আমি ধূমপান করি না, তাহলে ধূমপান না করার জন্য কোনো
ইচ্ছাশক্তির দরকার পড়বে না। দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার কে পরিবর্তন করতে
হলে নিজের পরিবর্তন করতে হবে।
নিজের
পরিচয় বদলাতে হলে দুটি জিনিস করতে হবে:-
১)আপনাকে
নির্ণয় নিতে হবে কিধরনের ব্যক্তি আপনি হাতে চান। যদি আপনার আর্থিক অবস্থা উন্নতির লক্ষ্য থাকে, তাহলে আপনার পরিচয় হবে আপনি টাকা-পয়সার
প্রতি দায়িত্ববান হবেন। আপনাকে অযথা খরচ করা বন্ধ করতে হবে।
আপনাকে
ছোট ছোট প্রাপ্তির মাধ্যমে প্রমান করতে হবে যে আপনি পারেন। আপনার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র
আচরণ কে পরিবর্তন করে ধনাত্বক করে আলাদা পরিচয় তৈরি করতে হবে। যদি আপনার
স্বাস্থ্যের উন্নতি করার লক্ষ্য থাকে, যদি আপনি চান 20 কেজি ওজন ঘটাতে, এটা হলো CHANGE IN
OUTCOME কিন্তু এর জন্য আগে আপনাকে ভাবতে হবে
আপনি কেমন ব্যক্তি হবেন? আপনাকে এমন ব্যক্তি হতে হবে যিনি ব্যায়াম করাকে ভালোবাসেন এবং স্বাস্থ্যকর
খাবার খেতে ভালোবাসেন। যদি আপনি এভাবে আপনার পরিচয় তৈরি করেন, তাহলে আপনার লক্ষ্য আপনা আপনি পেয়ে যাবেন।
এবার
আপনাকে ভাবতে হবে কি কি অ্যাটমিক হ্যাবিট আছে যাকে প্রয়োগ করলে আপনার লক্ষ্যে
পৌছাবেন। হতে পারে রোজ সকালে 20 মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। এবং চেষ্টা
করুন রোজ অন্তত একবারের খাবার স্বাস্থ্যকর খাবার খাবেনই খাবেন। রোজ 20 মিনিট ব্যায়াম যদি করেন এবং
স্বাস্থ্যকর খাবার যদি খান,
তাহলে আপনি প্রমান করছেন যে সত্যি আপনি
স্বাস্থ্যকর ব্যক্তি হচ্ছেন। এবং এই ব্যবহার যদি দীর্ঘদিন অভ্যাস
হিসাবে রেখে দেন, তখন সেটা আপনার পরিচয় হয়ে যাবে। এককথায় স্বাস্থ্যকর এবং
সুস্থব্যক্তি হওয়া যদি আপনার পরিচিত হয়ে যায়, তাহলে জিম করতে বা স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে কোনো ইচ্ছাশক্তি দরকার
পড়বে না। এবং আপনি আপনা আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌছে যাবেন। এইভাবে সারা ফোকাস অ্যাটমিক হ্যাবিট এর
উপর রেখে এবং OUTCOME সম্বন্ধে না ভাবার এই পদ্ধতি কে বলা হয় SYSTEM ORIENTED
THINKING । আপনার অ্যাটমিক হ্যাবিট এ যতই শক্তিশালী সিস্টেম তৈরি করবেন ততই আপনি বেশি
শক্তিশালী হবেন।
আপনাকে
এটা ভাবতে হবে অভ্যাস কি এবং কিভাবে তৈরি হয়? অভ্যাস হলো আমাদের মস্তিষ্কের একটা
সংক্ষেপন। যখন আপনি প্রথমবার গাড়ি চালানো শেখেন তখন প্রত্যেকটি জিনিস ধ্যানে
রাখতে হয়। প্রত্যেকবার দিক বদলের সময় আপনাকে ভাবতে হয় এবার INDICATOR দিতে হবে, এবার কাঁচে দেখুন, এবার
স্টিয়ারিং ঘোরান ইত্যাদি। কিন্তু একবার যদি সেটা অভ্যাস হয়ে যায়
এবং আপনি ড্রাইভিং শিখে যান তখন আপনাকে সে ব্যাপারে এতোটা ভাবতে হয় না।
আপনার
সে ভালো স্বভাবই হোক বা খারাপ স্বভাব, সেটা তৈরি করতে হয়। কারণ আপনার মন SHORT CUT খুঁজতে থাকে।
হ্যাবিট
তৈরি হয় এই চারটি ধাপ থেকে:-১)CUE ২)CRAVING ৩)RESPONSE ৪)REWARD
এই
চারটি ধাপ কে বোঝার জন্য ধূমপান অভ্যাস কে ধরা হলো।:-
১)আপনার
CUE হলো ইঙ্গিত :-যে কোনো ইশারা যা মনে করিয়ে দেয় যে আপনাকে ধূমপান করতে হবে। হতে
পারে সেটা আপনার যখনি দুপুরের খাবার সারা হয় তখনি ধূমপান এর ইচ্ছা জাগে। বা এরকমই
কিছু অভ্যাস এর সাথে অন্য অভ্যাস এর সম্পর্ক।
২)ক্রেভিং হলো আকাঙ্খা :-যখন স্মোকার এর মনে ইচ্ছা
জাগে যে আমাকে ধূমপান করা দরকার। ইচ্ছা জাগা ব্যাপারটা বিভিন্ন কারণে হয়। যদি
আপনার মধ্যে ধূমপান করার ইচ্ছা না আসে তাহলে আপনি ধূমপান করবেন না।
৩)
রেসপন্স :-আপনার ক্রেভিং কে সন্তুষ্ট করতে আপনি যা করেন তা হলো রেসপন্স। একজন
ধূমপানকারীর ক্ষেত্রে সিগারেটে বের করে ধরানো টাই হলো রেসপন্স।
৪)রিওয়ার্ড
:- রিওয়ার্ড হলো হ্যাবিট এর শেষ সন্তুষ্টি বা উপহার। যদি আপনার কাজের কোনো উপহার না পাওয়া
যায়,
তাহলে আপনি সে কাজটি করবেন না। সিগারেটে এর ক্ষেত্রে রিওয়ার্ড হলো নিকোটিন যা
সিগারেটে এ পাওয়া যায় যা আপনাকে উদ্দীপনা দেয়।
যদি
আপনার কোনো অভ্যাস তৈরি কারবার দরকার আছে যেমন ব্যায়াম করা, বা পড়াশুনা করা, বা কোনো কাজ করা, অথবা যদি কোনো খারাপ অভ্যাস যেমন
ধূমপান কে
ত্যাগ কারবার দরকার থাকে তাহলে এই “হ্যাবিট লুপ” কে বুঝতে হবে। CUE -CRAVING -RESPONSE -REWARD
হ্যাবিট
অর্থাৎ অভ্যাস পরিবর্তনের চারটি পদ্ধতি আছে। :-
১) Make
it obvious.
২)Make
it attractive.
৩)Make
it easy .
৪)Make
it satisfying.
আপনার
জন্য অভ্যাস তৈরি করা সহজ হওয়া দরকার কঠিন নয়। এবং অভ্যাস করার
পর প্রতিদান বা পুরস্কারও পাওয়া যেতে হবে।
ধরুন
আপনি একজন লেখক হতে চান এবং লেখার অভ্যাস শুরু করতে হবে:-
১ম
ধাপ হলো CUE বা ইঙ্গিত
:-Cue অবশ্যই হওয়া দরকার। সবথেকে সাধারণ ইঙ্গিত হলো সময় এবং স্থান। সময় ঠিক করতে হবে যে আমি প্রতিদিন 5 টার সময় ডেস্ক এ বসে লিখব বা ঘরের এই
স্থানে বসে লিখব। আপনি আপনার অবস্থান কেও ইঙ্গিত করতে পারেন। আপনি আপনার ডেস্ক এ নোটবুক রাখুন এবং
অ্যালার্ম লাগান যে এই সময় লিখব।
Cue কে তৈরি করার আরেকটি পদ্ধতি হলো habit staking। এর অর্থ হলো একটি অভ্যাস এর পর অন্য
একটি অভ্যাস কে জুড়ে দেওয়া।
যেমন
আমি নাস্তা করার পর লেখার কাজ শুরু করবো। যদি আপনি রোজ ভোরে উঠে motivational video দেখেন তাহলে সেটি একটা অভ্যাস দখল করার
পদ্ধতি।
এবার হলো Craving বা আকাঙ্খা :-এই অভ্যাস কে আকর্ষণীয়
বানান। আকর্ষণীয় বানানোর জন্য এই অভ্যাস কে এমন একটি কাজ এর সঙ্গে জুড়ে দিন
যেটা আপনি করতে পছন্দ করেন। এটাকে বলা হয় প্রলোভন তৈরি করা। ধরুন আপনিশাস্ত্রীয় সংগীত পছন্দ করেন। যখনি ৫টা বাজলো আপনি ডেস্ক এ চলে যান, 10 মিনিট শাস্ত্রীয় সংগীত শুনুন, তারপর লিখতে আরম্ভ করুন। এতে লেখার জন্য আপনার মনে আকাঙ্খা
আসবে। অথবা আপনি লেখক দের একটি দল এ যোগদান করুন। তাঁদের দ্বারা উৎসাহিত হন। Facebook এ কোনো লেখকদের Community তে যোগদান করুন। অথবা রোজ নিজের লেখা
ইন্টারনেট এ পোস্ট করুন। এখানে আপনি আপনার সৃজনশীলতা কে ব্যবহার করে আপনার নতুন
লেখার কাজকে আরো আকর্ষণীয় করতে পারেন। আপনার লেখা পোস্ট যতই আকর্ষণীয় হবে, আপনার লেখার ইচ্ছা ও তত বাড়বে। আপনার অভ্যাস ততই স্থায়ী হবে।
Response বা সাড়া :-কাজটিকে সহজ করে তুলুন। অভ্যাস করার প্রক্রিয়া টা যতই কঠিন হবে সম্ভাবনা থাকে যে আপনি
ততই অভ্যাস করতে কম এগোবেন। তাই রোজ লেখার জন্য খাতা কলম বের করা, রোজ কি লিখবো এসব ভাবা, এসব এ আপনার অভ্যাস করাটা কঠিন করে
দেবে। তাই প্রথম থেকেই ডেস্ক সব জিনিস প্রস্তুত রাখতে হবে, যাতে লিখতে শুরু করাটা সহজ হয়ে যায়। আগে থেকেই প্রস্তুত রাখুন কোন খাতায়
লিখবেন? কি বিষয়ে লিখবেন? রোজ কত পাতা লিখবেন? ইত্যাদি। এই সময় যাতে আপনার মনে
বিশৃঙ্খলা না আসে তাই phone বন্ধ রাখুন বা নিঃশব্দে রাখুন। লেখার অভ্যাস করাটা যাতে সহজ হয় এমন
পরিবেশ তৈরি করুন। এখানে Kaizen rule ও ব্যবহার করতে পারেন। অভ্যাস টি এত ছোট করুন যে সেটা যেন সহজ
মনে হয়। শুরু করার জন্য আপনি শুধু ৫০টি শব্দ লিখতে পারেন। আপনার অভ্যাস করা আরো
সহজ হবে। আপনি হয়তো ভাববেন ছোট কাজ করে কি লাভ? যখন কোনো অভ্যাস এর ব্যাপার আসে তখন কোন অভ্যাস কতবার করেছেন সেটা
গুরুত্বপূর্ণ। আপনি একদিনে 3০০টি শব্দ লিখে বাকি তিনদিন যদি না লেখেন, তারথেকে তাই রোজ ৫০টি শব্দ লিখুন-এটা
অনেক লাভকারী।
শেষ
ধাপ হলো Reward বা প্রতিদান :-আপনি যা অভ্যাস করছেন তার শেষে যদি
প্রতিদান বা পুরস্কার না পাওয়া যায়, তাহলে সেটা করার ইচ্ছা থাকবে না।
অভ্যাস যেমন, লেখা-পড়া করা,
গান গাওয়া, ব্যায়াম করা এসবের পুরস্কার বা প্রতিদান খুব দেরিতে পাওয়া যায়।
অর্থাৎ দীর্ঘদিন কাজ করার পর প্রতিদান পাওয়া যায়।
তাই
স্বল্পমেয়াদি প্রতিদান তৈরি করতে হবে। যাতে করে রোজ ওই অভ্যাস কে করতে পারি। যেমন একটি ক্যালেন্ডার এ habit
tracker বানান, রোজ ওই কাজ করার পর একটি ঘরে ক্রস
লিখুন। ওই cross বানানোই আপনার Reward হতে পারে। আরেকটি পদ্ধতি হলো Reward তৈরি করুন। যেমন রোজ একঘন্টা লেখার পর ১০ মিনিট গান শুনবেন। এটা
অবশ্যই যে আপনি যা প্রতিদান রাখবেন
সেটা যেন আপনার পরিচয় এর সঙ্গে মিলে যায় । যদি আপনি রোজ ব্যায়াম করার পর ice
cream খাবার প্রতিদান রাখেন তাহলে আপনার শরীর
এর ওজন ঘটাতে পারবেন না। আপনি পুরস্কার এর বদলে শাস্তিও রাখতে পারেন। যদি আপনি কোন
দিন লিখতে না পারেন তাহলে আপনি যেদিন লিখবেন না সেদিন আপনার বন্ধুকে ৫০০ টাকা
দেবেন।
এইভাবে
এই চারিটি ধাপ অনুসরণ করে অভ্যাস তৈরি করা যায়।
যদি
আপনাকে কোনো খারাপ অভ্যাস নষ্ট করার প্রয়োজন থাকে, তাহলে এর উল্টোটা করতে হবে:-
a ) Cue কে স্পষ্ট করার বদলে অদৃশ্য করতে হবে। ধরুন ধূমপান ছাড়তে হবে। যদি
আপনি রোজ লাঞ্চ ব্র্যাক এ ধূমপান করেন তাহলে রোজ লাঞ্চ ব্র্যাক এ সেখান থেকে অন্য
স্থানে চলে যান, এবং
সিগারেটের বদলে চকলেট খান।
b)ক্রেভিং
বা আকাঙ্খা কে তাড়ানোর জন্য ভাবুন ধূমপান করলে ফুসফুস এর কিরকম ক্ষতি হয়? ফুসফুস এ ক্যান্সার হলে কি অসুবিধা হয়? ক্যান্সার হাওয়া ফুসফুস এর ছবিটি মনে
মনে ভাবুন। অর্থাৎ আকাঙ্খা কে অআকর্ষণীয় করুন।
c ) রেসপন্স বা সাড়া কে কঠিন করুন। এমন
পরিবেশ তৈরি করুন যাতে সিগারেটে কেনা কঠিন হয়। যাতে সিগারেটে কেনার ইচ্ছে হলেও
কেনা সম্ভব না হয়। নিজের কাছে সিগারেটে রাখবেন না।
d)Reward বা প্রতিদান কম করতে হবে। আপনাকে রিওয়ার্ড কে নষ্ট করতে হবে অথবা
নেগেটিভ করতে হবে। ঠিক করুন যতবার আপনি ধূমপান করবেন ততবার আপনি একটি ৫০০ টাকার নোট ছিঁড়ে ফেলে
দেবেন। এভাবে রিওয়ার্ড কে কস্টকর করতে হবে, তাহলেই ধূমপান বা যে কোনো খারাপ অভ্যাস ছাড়া সম্ভব হবে।
সারবস্তু
“James Clear”
এর
লেখা “Atomic habit”
নামক
বই থেকে গৃহীত।
আরো পড়ুন:-চিন্তন করুন এবং সফল হন , কেন করবেন ? সেটা জেনে তবেই কাজটি করুন ,
জীবনে কম্পাউন্ড ইফেক্ট এর প্রভাব , বাধার মধ্যে দিয়ে পেরিয়েই সফলতা আসে ,
অহংকার হলো চরম শত্রু , আত্মজ্ঞান কি, আকর্ষণ সূত্র , শ্রীমদ্ভাগবত গীতা সার ,
For Motivational Articles In English visit.....www.badisafalta.com
0 Comments